শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : শেরপুরে অপহরনের ৬ দিন পরও খোঁজ মেলেনি শেরপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের সুমন মিয়ার।
সুমন গত ৪ নভেম্বর রাতে শহরের কসবা বারেক পাড়া যাওয়ার পথে বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকা থেকে অপহরণ হয়। পরে এ ঘটনায় তার মা-বাবা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই রাতে প্রথমে একটি জিডি এবং পরে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার পৌর এলাকার কসবা বারেক পাড়া (নিমতলা) মহল্লার মোঃ নজরুল ইসলাম এর পুত্র সুমন মিয়া (১৭) শেরপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। একই সাথে জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাউনের চর গ্রামের আজিম মাস্টারের কন্যা আন্নি আক্তারও একই কলেজে অধ্যায়ন করছেন। তবে তারা সুমন মিয়ার বাড়ির পাশে ভাড়া বাসায় থাকেন। সম্প্রতি একই কলেজের পড়ার সুবাদে আন্নি আক্তার সুমনকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সুমন এতে রাজি না হওয়ায় আন্নি বিক্ষুব্ধ হয়ে তার ক্ষতি করার জন্য পেছনে লেগে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ নভেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে সুমন মিয়া কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় আন্নি আক্তারের উপস্থিতিতে আরো ২-৩ জন যুবককে নিয়ে জোরপূর্বক সুমন মিয়াকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনার পর সুমন বাড়ি ফিরে না যাওয়ায় সুমনের মা-বাবা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঐদিন রাতে শেরপুর সদর থানায় একটি ডায়েরি করেন। এদিকে রাতেই বিষয়টি জানতে পেয়ে সুমন মিয়ার বাবা মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
কিন্তু ঘটনা ৬ দিন পার হলেও সুমনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদিকে মূল অপহরণকারী ঘটনার কয়েকদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও সুমনের সাথে তার কোন যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়ে অপহরণের বিষয়টি সে অস্বীকার করেন।
এদিকে সুমনের মা-বাবা আসামি গ্রেফতার ও তার ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে দফায় দফায় থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়।
পরে সুমনের মা-বাবা ১০ নভেম্বর রোববার দুপুরে এলাকাবাসী ও সুমনের বেশ কয়েকজন সহপাঠীসহ শেরপুরের পুলিশ সুপারের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ছেলেকে উদ্ধারসহ মূল আসামিদের গ্রেফতারের দাবী জানায়। এসময় সুমন মিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম পুলিশ সুপারের সাথে সাক্ষাত করে মামলার কাগজ তুলে দেন এবং তিনি কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এ বিষয়ে শেরপুরে পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আইন সবার জন্য সমান। এ ঘটনায় নিশ্চয়ই পুলিশ বসে নেই। তারপরেও আমি বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখবো বলে জানান তিনি।