শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : শেরপুর এলজিইডি ও জেলা পরিষদের রশি টানাটানিতে এডিপির বরাদ্ধ ৫ কোটি ৪৫ লাক্ষ টাকার ১৫৩টি প্রকল্প বন্ধ হয়ে আছে। বিভিন্ন স্থানে জনস্বার্থে গত এপ্রিলে ১৫৩টি প্রতিষ্ঠানে জেলা পরিষদ ওই বরাদ্ধ দেয়।বরাদ্ধ হলেও দুই সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরোধে প্রকল্প গুলো ফাইল বন্দি হয়ে আছে।

জানা গেছে ৩০জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ওই প্রকল্প গুলো চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠায়।১০এপ্রিল তারিখে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।শেরপুর জেলা পরিষদে কোন প্রকৌশলি না থাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ৭মে এলজিইডির একজন জৈষ্ঠ্য সহকারি প্রকৌশলিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অতিরিক্তি দায়িত্ব প্রদান করে।নির্দেশের প্রেক্ষিতে ৭ মে এলজিইডির জৈষ্ঠ্য সহাকারি প্রকৌশলি মোঃ রাকিবুল আলম রাকিব জেলা পরিষদের যোগদান করে।অভিযোগ রয়েছে যোগদানের পরে ওই কর্মকর্তা কোন কাজ করেন না।এর প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ প্রশাসক ২৬মে কাজের অগ্রগতি ও প্রক্কলন প্রস্ততের জন্য জরুরি চিঠিতে ওই প্রকৌশলিকে জেলা পরিষদে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন অফিস করতে,সপ্তাহে কমপক্ষে ১০টি প্রকল্পের প্রাক্কলন প্রস্তত, ১৫দিন পর পর প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়।মৌখিত ভাবে বারবার তাগিদ দিলেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন না।ওই কর্মকর্তা কাজ না করায় ১৫৩টি প্রকল্প বন্ধ হয়ে আছে।মানুষজন দূর দুরান্ত থেকে প্রতিদিন জেলা পরিষদে আসছে,প্রকল্পের খোঁজ খবর নিচ্ছে কিন্ত জেলা পরিষদের কোন সদোত্তর নেই।ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা গত জুনের মধ্যে।কিন্ত কাজের কোন অগ্রগতি নেই।সরকারের রাজস্ব খাত থেকে প্রকল্পের জন্য আরও অন্তত এক কোটি টাকা বরাদ্ধ পেয়েছে জেলা পরিষদ।আগের প্রকল্পের কোন গতি করতে না পারায় পরের টাকারও কিছু করতে পাচ্ছেনা জেলা পরিষদ।জেলা পরিষদের দাবী ওই প্রকৌশলিকে আলাদা অফিস,লোকবল দেওয়া হয়েছে কিন্ত তিনি সহযোগীতা করছেন না।এতে জেলা প্ররিষদ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পরিষদ বিভাগ।জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এলজিইডির নির্বার্হী প্রকৌশলিকে দায়ী করে বলেছেন প্রশাসনের কোন কাজকে তিনি সহযোগীতা করেন না।বিষয় গুলি সমাধান করতে জেলার সমন্বয় মিটিং এ নির্বাহী প্রকৌশলি আসেন না।
এদিকে শেরপুর এলজিইডি(স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল) বিভাগের দাবী, প্রকল্পে ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে।অসঙ্গতি পূর্ন প্রকল্পে দুনীতির দায় দিতে হবে জেনেই ওই প্রকল্পের কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করা যাচ্ছে না।আইন মোতাবেক ওই প্রকল্প গুলোর ইষ্টিমেট করবে জেলা পরিষদ বিভাগের প্রকৌশল বিভাগ।জেলা পরিষদের প্রকৌশলি না থাকলেও টেকনিশিয়ান বা প্রকৌশলি সমমানের সার্ভেয়ার রয়েছে।সার্ভেয়ার ইষ্টিমেট(কাজের পরিমাপ,মুল্য,গুরুত্ব সম্পর্কে আনুমানিক ধারণা) তৈরি করে স্বাক্ষর দিবেন।এলজিইডির দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকৌশলি দেখে শুনে ওই ইষ্টিমেটে স্বাক্ষর করে কাজ শুরু করবেন।কিন্ত জেলা পরিষদের করা প্রকৌশলি বা প্রকৌশলি সমমানের কারও স্বাক্ষর ছাড়াই ইষ্টিমেটে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলিকে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে।তাদের কোন টেকনিশিয়ানের স্বাক্ষর ছাড়া ইষ্টিমেট গুলোতে স্বাক্ষর করা বিপদ জনক।গত ৫মার্চ ১৫৩ প্রকল্পের ১৫টি ইষ্টিমেট জেলা পরিষদ এলজিইডির কাছে পাঠায়।এসব ইষ্টিমেট অসঙ্গতিপূর্ন হওয়ায় বিষয়টি প্রথমে মৌখিক ও পরে লিখিত ভাবে ৭ এপিল জেলা পরিষদের প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।কোন জবাব আসেনি।তারপর থেকে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ।এলজিইিডির অভিযোগ জেলা পরিষদ সার্ভেয়ারকে কাজ করতে দিচ্ছে না।অফিসের ননটেনেশিয়ান প্রশাসনিক কর্মকর্তা দিয়ে প্রকল্পের কাজ করাতে চায় জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা।
জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেছেন জেলা পরিষদের কার্য বন্টন অনুযায়ি ইষ্টিমেট করা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলির মৌখিক নির্দেশে সার্ভে করে ১৫টি ইষ্টিমেট জমা দিয়েছি।পরে কি হয়েছে জানি না।
জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলজিইডির জৈষ্ঠ্য সহাকারি প্রকৌশলি মোঃ রাকিবুল আলম রাকিব বলেছেন প্রকল্পে অনিয়ম আছে।অনিয়ম প্রকল্পের দায় আমি নিব না।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলি মোস্তাফিজুর রহমান প্রকল্পে সরকারি আইন মানা হয়নি।দুর্নীতি হতে পারে তাই সহযোগীতা করা যাচ্ছে না।জেলার সমন্বয় মিটিং এ জেলা পরিষদের নির্বাহী খারাপ আচরণ করেন তাই যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।তবে আমার অন্য কর্মকর্তাকে নিয়মিত পাঠানো হয়।
জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা জেবু নাহার সাম্মি বলেছেন প্রকল্পের ইষ্টিমেট গুলো এলজিইডিতে নিয়ে যায় পরে আর কোন জবাব পাই না।এটা এক ধারনের অফিসিয়াল আক্রোশ বলেছেন এই কর্মকর্তা।
জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক তরফতার মাহমুদুর রহমান বলেছেন দুই কর্মকর্তাকে ডেকে দ্রæত বিষয়টি সমস্বয় করা হবে।কারও জন্য সরকারি কাজ বসিয়ে রাখা যাবে না।