শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : শেরপুরে একটি কলার হাটে মাত্র দুই ঘন্টায় বিক্রি হয় কোটি টাকার কলা। মৌসুমী এই কলার হাটটি এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ হাটে প্রতিদিন আশপাশের শতাধিক কলা ব্যবসায়ী তাদের বাগানে উৎপাদিত কলা এনে বিক্রি করে থাকেন।
জেলা কৃষি বিভাগ এবং স্থানীয় কলা ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, জেলায় অল্প পুঁজি ও কম পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়ায় জেলায় কলা হয়ে উঠেছে এক সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল। কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় শেরপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে কলাচাষ। জেলার মাটি ও আবহাওয়া কলাচাষে উপযোগী, তাই যুক্ত হচ্ছেন নতুন চাষিরাও। চলতি বছর শেরপুরে ৬৭৫ হেক্টর জমিতে কলাচাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। তবে ইতোমধ্যেই তা ছাড়িয়ে ৯৪৩ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া শেরপুরের কলার গুণগত মান ভাল এবং সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্তত ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য যাচ্ছে এই জেলার কলা। তাই বর্তমানে অল্প পুঁজি ও কম পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়ায় শেরপুরে কলা হয়ে উঠেছে এক সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার চৌকিদার বাড়ি মোড়ের এ কলার হাট থেকে দৈনিক বিপুল পরিমাণ কলা বিক্রি হয়। এই হাটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ কোটি টাকার কলা ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। যা এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
কলাচাষি ও বিক্রেতারা জানান, শেরপুরের কলার স্বাদ ও গুনগতমান ভালো হওয়ায় চাহিদা বেশি। তাই শেরপুরের শ্রীবরদি উপজেলার চৌকিদার বাড়ি মোড়ের কলার হাট । প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত এ হাটে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কলাকাচিরা তাদের পলাইনে বিক্রি করে থাকেন।
আমির হামজা নামে এক কলা চাষি বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে কলা আবাদ করেছি। ফলানো অনেক হয়েছে। আমার দুই বিঘা জমিতে কলা চারারোপণ থেকে কলা বিক্রি করার আগ পর্যন্ত এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে এবং প্রায় তিন লক্ষ টাকা কলা বিক্রি করেছি।
ইদ্রিস আলী নামে এক কলার আরতদার বলেন, এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষ করে কুড়িগ্রাম রংপুর ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল নেত্রকোনা সহ বিভিন্ন এলাকার কলা ব্যবসায়ীরা এসে ফলা ক্রয় করেন। এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের খোলা চাষিরা এসে এই হাটে কলা বিক্রি করে থাকে। প্রায় কোটি টাকার মতো কলা বেচাকিনি হয় একদিনে। আমরা আগত ব্যবসায়ীদের নিরাপদে কলা কেনাবেচা করার সহযোগিতা করে থাকি।
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসান জানান, চলতি বছর শ্রীবরদী উপজেলায় ৬৭৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে। কলা একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন কলাচাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীবরদী উপজেলার সদরে চৌকিদার বাড়ী মোড়ে একটি কলার হাট রয়েছে।এই হাটে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকার কলা বিক্রি হয়।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার শ্রীবরদী উপজেলার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকাতেও কলা চাষ হচ্ছে। একবার কলার চারা রোপণে ২৪ মাসে তিনবার ফলন পাওয়া যায়। অল্প শ্রম ও পুঁজিতে ভালো লাভ হওয়ায় অন্য ফসলের তুলনায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কলা চাষের পরিধি। ভবিষ্যতে এ চাষ আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
			        