শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকায় ভিডিও করে বন্য হাতিকে উত্ত্যক্ত করায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক চা দোকানী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বালিজুরী রেঞ্জের মালাকোচা বিটের মালাকোচা-সোনাঝুড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওমর ফারুক (৪০) পার্শ্ববর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার ফাকরাবাদ এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী মালাকোচা-সোনাঝুড়ি এলাকায় ২৫-৩০টি বন্যহাতির একটি দল লোকালয়ে নেমে আসে।
এ সময় বন্যহাতি দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন এবং কিন্তু ফারুক নামের ওই চায়ের দোকানী উত্যক্ত ও ভিডিও করতে কাছে গেলে হাতিটি তাকে ধাওয়া দিয়ে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ে পিষ্ট করে।
পরে আশপাশের লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি ও মশাল জ্বালিয়ে হাতির দলকে তাড়িয়ে দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়মনসিংহ বনবিভাগের বালিজুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, হাতি থাকাকালীন সময়ে সীমান্ত সড়ক দিয়ে সাবধানে চলাচল এবং কোন ব্যক্তি বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সংরক্ষিত বনে ঢুকে হাতির ভিডিও না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কেউ যদি হাতিসহ বন্যপ্রাণীদের বিরক্ত করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন ও বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, হাতির আক্রমণে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে বা কৃষকের ফসল নষ্ট হলে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ বনবিভাগ কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস এর সাধারণ সম্পাদক মারুফ রহমান বলেন, হাতি নিরীহ প্রাণী এবং এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন অবস্থায় শেরপুরে সীমান্তবর্তী এলাকায় যত্রতত্র কনটেন্ট ক্রিয়েটারসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এবং স্থানীয়রা ফসল বাচানোর নামে হাতিদের উত্ত্যক্ত করে আসছে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছে, বিদ্যুতায়িত করে হাতিকে হত্যা করছে যেটা পরিবেশের জন্য খুবই মারাত্মক ঝুকি । তাই আমরা মনে করি হাতি মানুষের সহাবস্থানের জন্য বিশেষ করে মানুষকেই শান্ত থাকতে হবে এবং কৌশল অবলম্বন করে হাতির হাত থেকে বাঁচতে এবং হাতি কেউ রক্ষা করতে হবে।
