বাজেটের চ্যালেঞ্জে অন্তর্বর্তী সরকার: কালো টাকা, করের বোঝা আর অর্থনৈতিক চাপ

by শেরপুর কণ্ঠ ডেস্ক
1 মিনিটের পড়া

ক্ষমতায় আসার দশ মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো বাজেট ঘোষণা করলো অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, তার পরিমাণ সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা—যা গত বছরের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম।

এই বাজেট এসেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশের অর্থনীতি নানা সংকটে জর্জরিত। একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাজস্ব ঘাটতি, অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণের কঠিন শর্ত এবং বিনিয়োগে স্থবিরতা—সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় চাপ ক্রমাগত বাড়ছে।

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর এটি প্রথম বাজেট। তাই বাজেট ঘোষণার আগে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কী নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা ঘিরে বাড়তি আগ্রহ ও প্রত্যাশা ছিল।

তবে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, বাজেটের ভাষা যতই নতুন হোক, কাঠামোতে পুরনো ধারার ছাপই স্পষ্ট।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, “বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগের কথা বলা হলেও, মূল কাঠামোটি একেবারে ঐতিহ্যবাহী। ফলে যেসব কাঠামোগত দুর্বলতা অতীতে ছিল, সেগুলোর পুনরাবৃত্তি হয়েছে এবারও। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ছিল এক নতুন ধরণের বাজেট উপস্থাপনের সুযোগ, যা তারা কাজে লাগাতে পারেনি।”

বিশেষজ্ঞরা আরও সমালোচনা করেছেন করনীতির দিক নিয়েও। করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর বদলে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করের হার বাড়ানোর প্রস্তাবকে অনেকেই বৈষম্যমূলক ও অপরিকল্পিত বলে মনে করছেন।

তবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ নিজে এই বাজেটকে ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন। তিনি বলেন, “এই বাজেট কিছুটা আলাদা। আমরা প্রথমবারের মতো আগের বছরের তুলনায় ছোট বাজেট প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিনির্ভর ধারণা থেকে সরে গিয়ে এবার সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে।”

সবমিলিয়ে বলা যায়, চাপে থাকা অর্থনীতিতে বাজেট কিছুটা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিতে চাইলেও, কাঙ্ক্ষিত নতুনত্ব বা দৃষ্টিভঙ্গির অভাবের কারণে সেটি কতটা সফল হবে—তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

আরো খবর

আপনার মতামত দিন