Home » শেরপুর জেলা বিএনপি নেতা রুবেল পদ হারালেও মাঠ ছাড়েননি …!

শেরপুর জেলা বিএনপি নেতা রুবেল পদ হারালেও মাঠ ছাড়েননি …!

by শেরপুর কণ্ঠ ডেস্ক

শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, তিনবারের সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল এবার জেলা বিএনপির সভাপতি পদ হারালেও তিনি মাঠ ছাড়েননি। প্রায় প্রতিদিনই তার নির্বাচনী এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এলাকায় তিনি তার দলীয় কার্যক্রমের মিছিল-মিটিংসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজে সময় ব্যয় করছেন। ঘুরছেন সর্বস্তরের মানুষের দ্বারে দ্বারে। টার্গেট, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থ বারের মতো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এমপি হওয়া। 

জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা ১৪৫ বা শেরপুর-৩ আসনটি মূলত শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনে ২০২৩ সালের সর্বশেষ তথ্য মতে মোট ভোটার প্রায় ২ লক্ষ ৮২ হাজার। এ আসনে ১৯৯১ সালে তার বাবা ডাক্তার সেরাজুল হক ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর তার বাবার মৃত্যুজনিত কারণে ১৯৯৪ সালে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। এরপর ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আরো দুইবার এমপি নির্বাচিত হন। মাহমুদুল হক রুবেলের এলাকায় নম্র ভদ্র ও তরুণ নেতা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। পরবর্তী ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমএ বারী, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার আপন  চাচা প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক চাঁন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগের এডিএম শহিদুল ইসলামসহ পূর্বের সকলেই ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। 

এদিকে আগস্ট বিপ্লবের পর ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ এবং তাদের দোসরা দেশ এবং জেলার বাইরে পালিয়ে যায়। সারাদেশে বিএনপি পুনর্গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ নভেম্বর শেরপুর জেলা বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হযরত আলী কে আহ্বায়ক, এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম এবং আব্দুল আউয়াল চৌধুরী কে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। 

কিন্তু প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনার আগেই গত ২ জানুয়ারী শেরপুর জেলা বিএনপি’র আংশিক আহবায়ক কমিটি স্থগিত ঘোষণা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শেরপুর জেলা বিএনপি’র নামে কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রহুল কবির রিজভী। 

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দলের গৃহীত সিদ্ধান্তবলে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা জানানো হয়। তবে এলাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে যে, আংশিক আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত হলেও পরবর্তীতে ঘোষিত কমিটিতে রুবেল ফিরে আসতে পারে। আবার পূর্বের কমিটিও ফিরে আসলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। 

তবে ব্যাপক জনপ্রিয় ও তিনবারের এমপি থাকার পরেও আহ্বায়ক কমিটিতে তিনি আহ্বায়ক হতে না পারার কারণটি নিয়ে জেলা বিএনপি সহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে তুমুল সমালোচনার ঝড় বইছে । তবে এ বিষয়ে মাহমুদুল হক রুবেল মুখে কুলুপ এঁটে তার নির্বাচনী এলাকায় আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

কমিটি স্থগিত ও তার পদ হারানোর বিষয়ে এবং তার নির্বাচনে এলাকায় দলীয় কার্যক্রম ও গণসংযোগের বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল বলেন, বর্তমান নতুন আহবায়ক কমিটির বিষয়টি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই। দলের সিদ্ধান্তই আমাকে মেনে নিয়ে দলের কাজ করতে হবে এবং আমি তাই করে  যাচ্ছি। জেলা কমিটির সভাপতি বা আহবায়ক না হতে পারা কোন বিষয় নয়। আমি এখনো কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রয়েছি। আগামীতে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি তথা ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে এবং ধানের শীষ কে বিজয়ী করতে মাঠে রয়েছি। মূলত আমার এলাকায় তৃণমূল জনগণের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাদের সুখে দু:খে পাশে থেকে পূর্বের ন্যায় এখনও কাজ করে যাচ্ছি। জনগণই আমার শক্তি, আমার সম্মান।

এদিকে কমিটি স্থগিতের বিষয়ে সদ্য সাবেক আহ্বায়ক মো. হযরত আলী বলেন, আহবায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। বিলুপ্ত করা হয়নি। দল যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। এতে আমার কোনো বক্তব্য নাই।

আরো খবর

আপনার মতামত দিন