Home » শেরপুরের উন্নয়নের দাবীতে মানববন্ধন হয়ে গেলো জন সমুদ্রে

শেরপুরের উন্নয়নের দাবীতে মানববন্ধন হয়ে গেলো জন সমুদ্রে

by শেরপুর কণ্ঠ ডেস্ক

শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : পিছিয়ে পড়া শেরপুর জেলার যৌক্তিক উন্নয়নের ৫ দফা দাবিতে শেরপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১১ টা এক মিনিট থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ‘নাগরিক মানবন্ধন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মানববন্ধনে জাতি, ধর্ম, বর্ণসহ রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড় থেকে অস্টমীতলা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ১৪ কিলোমিটার মানববন্ধনটিতে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ফলে মানববন্ধনটি এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পাশাপাশি বাসা বাড়ি থেকে শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে এসে রাস্তায় নেমে পড়ে।

জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে শেরপুরকে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করা হলেও ৪১ বছর পর সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জেলার প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে শেরপুরবাসী অনেক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসময় জেলায় উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, উচ্চ শিক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়, যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেল নেটওয়ার্কের সংযোগ, পর্যটন খাতের উন্নয়নে পর্যটন এলাকায় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে হোটেল-মোটেল নির্মাণসহ ব্যবসা-বানিজ্য প্রসার লাভে অর্থনৈতিক জোন নির্মাণের দাবী করেন বক্তারা। 

এ মানববন্ধন চলাকালে শেরপুরের প্রায় শতাধিক রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক,  সামাজিক-সংস্কৃতি সংগঠন, হরিজন, আদিবাসী, তৃতীয় লিঙ্গের সংগঠনসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে অস্টমীতলা থেকে খোয়ারপাড় মোড় পর্যন্ত সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বিভিন্ন যানবাহন থামিয়েও সাধারণ মানুষকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। 

অর্ধলক্ষাধিক মানুষের মানবন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের জরুরী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক চারটি এ্যাম্বুলেন্সে চারজন সরকারী চিকিৎসকসহ বেশ কয়েকজন করে নার্স সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমান ছিলেন। সর্বস্তরের মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল পানি সরবরাহ করেছে। যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কয়েকটি গাড়ী সার্বক্ষণিক নজরদারী করেছে মানববন্ধনটিকে। তবে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচী শেষ হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ ব্যাপক তৎপর ছিলেন।

জেলার সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবীতে অনুষ্ঠিত এই আন্দোলনের পরও শেরপুরে দৃশ্যমান উন্নয়নের ব্যবস্থা করা না হলে, প্রয়োজনে জেলাকে শাটডাউনের মত কঠোর কর্মসূচী দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জেলার ইতিহাসে রাজনৈতিক সমাবেশ ছাড়া সর্বোচ্চ জনসম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা গেছে এ মানববন্ধনে।

মানববন্ধনে প্রস্তাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদলের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন প্রস্তাবের সভাপতি কাকন রেজা। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন

মাওলানা আহসান উল্লা এবং গীতা পাঠ করেন বিজয় কৃষ্ণ চক্রবর্তী।

এসময় জেলার সাংবাদিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ। এছাড়াও বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল, বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আ.জ.ম রেজাউল করিম খান, মডেল গার্লসঃ কলেজের অধ্যক্ষ, এবিএম মামুনুর রশি রশিদ পলাশ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুরাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, ট্রাক মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল আডযাল চৌধুরী, পিপি আব্দুল মান্নান, জামায়াতের জেলা আমীর মাওলানা হাফিজুর রহমান, জামায়েত নেতা মাওলানা আব্দুল বাতেন, বিএনপি নেতা ও সাবেক জিএস ফজলুর রহমান তারা, শ্রমিক নেতা মোঃ শওকত হোসেন, যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ, শেরপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত আরিফ হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মমিনুর রহমান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আরো খবর

আপনার মতামত দিন