Home » শেরপুরে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ! ৭ মাসে ৩৫ খুন। উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ

শেরপুরে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ! ৭ মাসে ৩৫ খুন। উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ

by শেরপুর কণ্ঠ ডেস্ক

শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শেরপুরে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটেছে। খুন, ডাকাতি, লোটপাট, চুরি, দখল, চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন সহ নানাবিধ অপরাধ সংগঠিত হওয়ায় সাধারত মানুষ উদ্বেগে প্রকাশ করেছেন। জনমনে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আতংক। সাধারণ মানুষের অভিযোগ কোথাও নিরাপদ নেই মানুষ। তবে পুলিশ দাবি করেছে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে।

শেরপুর জেলায় ৫ই আগষ্টে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর পুলিশের ভুমিকা দুর্বল হয়ে পড়ার সুযোগে জেলায় ব্যাপক হামলা খুন, ডাকাতি, লোটপাট, চুরি, দখল, চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েক গুণ।

পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারী ২০২৪ থেকে আগষ্ট ২০২৪ পর্যন্ত খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৭ টি। আর ধর্ষন ৩৯ টি এবং অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৪ টি। এদিকে আগষ্ট-২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৫ টি, ধর্ষণ ৫২ ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২৭। এ ছাড়াও আগষ্ট-২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত প্রত্যেক খুনের পর অভিযুক্ত ব্যাক্তি সহ শত শত সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘড়ে হামলা, ভাংচুর ও লোটপাট চালিয়েছে দূবৃত্তরা। অনেক ক্ষেত্রে বাড়ি-ঘরের চিহ্ন পর্যন্ত মুচে ফেলা হয়েছে। এ সব ঘঁটনায় অনেকে মামলা পর্যন্ত করতে সাহস করেনি। 

চরমোচারিয়া ইউনিয়নের হরিণধারা গ্রামের বাসিন্দা রাজু আহাম্মেদ বলেন, আমাদের গ্রামে কয়েকদিন আগে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্দ্বে একজন নিহত হওয়ার ঘঁটনায় আসামী সহ আশে পাশের প্রায় পাঁচশটি বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে দূবৃত্তরা। বাড়ির ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে সাম্প্রতিক কালে নানাবিধ অপরাধ সংগঠিত হওয়ায় উদ্বেগে প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। মানুষের মনে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আতংক। সাধারণ মানুষের অভিযোগ কোথাও নিরাপদ নেই তারা।

৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি কেমন দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে শেরপুর মডেল গার্লস কলেজের প্রভাষক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে আমাদেরকে চিন্তিত করেছে আইনের প্রতি মানুষের ভয়ভীতি কমেছে এবং আইন শৃংখলা বাহিনি মাঠে তৎপর না থাকায় শেরপুরে আইন শৃংখলা বেশ অবনতি হয়েছে। একদল অপরাজনীতিবীদ, কিশোর গ্যাং এবং ফ্যাসিষ্টদের কিছু লোকজন মিলে শেরপুরকে অশান্ত করে ফেলেছে। সব মিলিয়ে শেরপুরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নাজুক। রাষ্টের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন এখন ল এন্ড ওয়ার্ডার ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

শেরপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এম কে মুরাদুজ্জামান বলেন, ফ্যাসিবাদের দুসররাই ৫ আগষ্টের পর নৈরাজ্য পরিবেশ তৈরি করার জন্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতি হ য ব র ল অবস্থা সৃষ্টি করেছে। তবে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকারকে আমাদের সকলের সহযোগিতা করতে হবে।

শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি খুবই ভংগুর ছিলো। আমি সেপ্টেম্বর মাসে শেরপুরে যোগদান করার পর যেটি দেখেছি কোথাও অপরাধ সংগঠিত হলে পুলিশ দলগত ভাবেও বের হতে পারতো না। একটা ভয়ের মধ্যে ছিলো পুলিশ। মব জাস্টিস বা বিভিন্ন ব্যানারে মানুষের আইন না মানার যে প্রবনতা তা খুবই মারাত্নক ছিলো। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আমার পুলিশ বাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শেরপুরের মানুষ আমাকে সহযোগিতা করেছে। 

আরো খবর

আপনার মতামত দিন