Home » পর্যটনের সম্ভবনা থাকলেও সমৃদ্ধি পায়নি সীমান্ত কন্যা শেরপুর।

পর্যটনের সম্ভবনা থাকলেও সমৃদ্ধি পায়নি সীমান্ত কন্যা শেরপুর।

by শেরপুর কণ্ঠ ডেস্ক

শেরপুর কন্ঠ ডেস্ক : সীমান্ত কন্যা শেরপুর।প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড খ্যাত মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলা ছুইছুই এই জেলার তিন উপজেলার ঘিরে আশা পর্যটনের সম্ভবনা থাকলেও সমৃদ্ধি পায়নি।শ্রীবরর্দী ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি গারোপাহাড়।এই ৩৫ কিঃমিঃ গারো পাহাড় একেবারে মেঘালয় সংলগ্ন।হাত বাড়ালেই মেঘালয়।এই গারো পাহাড় সুউচ্চ নয় তবে এখানকার শাল-গজারি, ইউকিলিপটাস-একাশিয়া,সেগুন-মেহগিনি,রাবার,মিনঝিরিসহ নানা প্রজাতির সুন্দর সুন্দর বৃক্ষ ঘেরা উূঁচু নীঁচু টিলা আর অসংখ্য ঝর্ণা, ঝোড়া ও ছড়ায় জলের কলকল শব্দ মন জুড়াবে।সম্প্রতি যোগ হয়েছে চা বাগান,কাজু বাদাম,চেরী,কফি,ড্রাগনসহ প্রাচ্য ও প্রাশ্চ্যত্বের নানা ফুল ফল আর ঔষধি গাছের বাগান।এখানে শত শত বছর ধরে বসবাসকারী আদিবাসি নৃ-গোষ্ঠির সংস্কৃতি ও জীবন-জীবিকা পাহাড়ের সৌন্দর্যকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে সীমান্ত সড়ক যোগাযোগের পথকে করেছে অবারিত।এই সীমান্ত সড়ক সিলেট থেকে শুরু হয়ে ময়মনসিংহের পযটরাঞ্চল হালুয়াঘাট দিয়ে এই পাহাড়ের বুক বেয়ে জামালপুরের আরেক পর্যটন অঞ্চল বকশিগঞ্জের লাউচাপড়া দিয়ে মিশেছে উত্তর বঙ্গের জেলা কুড়িগ্রামে।পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ারে দাড়িয়ে পাহাড়ের অনন্যরুপ ও সীমান্তের ওপারের ভারতীয় অধিবাসীদের ঘর-বাড়ি’র দৃশ্য দেখার মজাই আলাদা।এখানকার লাল মাটি আর মায়া ভরা ঘন সবুজ প্রকৃতির মিতালি আগন্তককে বিমোহিত করে।

পাহাড়ের চুড়ায় উঠে অনায়াসেই ছোয়া পাওয়া যাবে পাহাড়-নদী আর রোদ-বৃষ্টির দোলা।এই বনের বুক চিড়ে চীন ও ভারত থেকে আসা খরস্রোতা অন্তত চারটি নদী ও নদীর মূল্যবান লাল বালু সবুজ পাহাড়ের সাথে মিলেমিশে এক অপরুপ সেতুবন্ধন সৃষ্ঠি করেছে মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে।পর্যটন অধ্যূষিত এই তিনটি উপজেলা জামালপুর জেলার পর্যটন অধ্যূষিত বকশিগজ্ঞের লাউচাপড়া একেবারেই পাশাপাশি।সবুজ আকাশের নীচে দাড়িয়ে পাহাড়ের গা ছমছম নীরব নৈঃসর্গিক দৃশ্যকে আলিঙ্গন হবে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার শুভক্ষণ।এখানে পর্যটনের এত সম্ভাবনা থাকার পরও সুযোগ সুবিধা না থাকায় পর্যটনের বিশাল সম্ভবনা থাকলেও সমৃিদ্ধ পায়নি সীমান্ত কন্যা শেরপুর।কখনও কখনও অপরিকল্পিত ভাবে সরকারি টাকার অপচয় করে পাহাড়ের সৌন্দর্যকে নষ্ট করা হয়েছে কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।পাহাড় জুড়ে দুবৃত্তদের বালু তোলার শব্দ, ট্রাকের ভটভট শব্দ আর তেল মবিল পোড়ানোর দগদগে র্দুগন্ধ পাহাড়ের পরিবেশকে বিদগ্ধ করছে।আবার যুক্ত হয়েছে পাথর তোলা দুবৃত্তদের অত্যাচার।

জানা গেছে সম্প্রতি পর্যটন স্পট গজনীতে কৃত্রিম কিছু পশুপাখি,ঝর্ণা করা হয়েছে।এসব স্থাপনা অপরিকল্পিত ও অযত্ন অবহেলা পাহাড়ের সৌন্দর্যকে বিবর্ণ করে তোলার অভিযোগও রয়েছে বিস্তর।বনের মূল আকর্ষণ রাংটিয়া অঞ্চলে সুবিশাল মোটেল হবে,নিরাপত্তার জন্য পর্যটন পুলিশ আসবে ,এমন কথা শুনা যাচ্ছে এক যুগ ধরে ।সূত্র জানায় ঝিনাইগাতি উপজেলার নব্বয়ের দশকে নব্বই একর পাহাড়ি টিঁলায় ‘গজনী অবকাশ কেন্দ্র’ নামে একটি পিকনিক স্পট গড়ে তোলে জেলা প্রশাসন।তারপর থেকেই এই জেলাকে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্ঠা চলে আসছে।কিন্তু হয়নি।আবার বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসক কোন পরিকল্পনা ছাড়াই কিছুু করেছের।ফলে অনেক স্থানে প্রকৃতি ধ্বংস হয়েছে কিন্ত সৌন্দর্য বাড়েনি।প্রাকান্তরে সরকারের কোটিকোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।নালিতাবাড়ী উপজেলায় সরকারের বন বিভাগের ৩৮০ একর পাহাড়ি টিলার উপর “মধুটিলা ইকো পার্ক” নামে মনোরম স্থান রয়েছে।প্রকৃতি কত মনমুগ্ধকর তা এই ইকোপার্ক চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা।সুবিশাল এই বনে প্রাকৃতিক নানা ছোট বড় গাছ , নদী ,পাখি গুলো যেন ছবির মত সুন্দর। রয়েছে বিরল প্রজাতির পশু পাখি ঔষধি ও সৌন্দর্য বর্ধক প্রজাতির গাছের বাগান, মৌসুমী ফুলের বাগান,বণ্য হরিণ,শুকর,বন মোরগের দেখা পাওয়া যায়।তবে ব্যবস্থাপনা,নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা না থাকায় পর্যটকদের তেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়নি।বিশাল সম্ভবনার মধুটিলায় সরকার প্রতি বছর এক দেড় কোটি টাকার রাজস্ব ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না।এই উপজেলার সীমান্তবর্তী তারানি এলাকার তারানি পাহাড়।এখান থেকে মেঘালয়ের তুরা পাহাড় যেন হাত দিয়েই ছোয়া যায়।পাশেই খ্রিষ্টানদের আর্ন্তজাতিক মানের সুসজ্জিত উপাসনালয়, চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যালয় আর ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের থাকার হোস্টেল।রয়েছে নালিতাবাড়ীর খ্রীষ্টান পল্লীতে ফাতেমা রাণীর বিখ্যাত তীর্থ স্থান।এত সুযোগ থাকার পরও থাকা,খাওয়া,নিরাপত্তাসহ অন্য কোন বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় বছরের পর বছর ধরে অধরাই থেকে গেল এত সম্ভবনা।

অপর উপজেলা শ্রীবরদীর প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য মন্ডিত বালিঝুড়ির বিশাল অঞ্চলকে ঘিরে ব্যাপক পর্যটন অঞ্চল গড়ে উঠার সম্ভবনা থাকলেও রহস্য জনক কারণে কিছুই হয়নি।সোনাঝুড়িতে ৭৭.১৩ একর জমিতে পর্যটন গড়ে তুলার প্রস্তাব পাচ বছর ধরে ফাইলবন্ধি।এখানে প্রকৃতি উজার করে দিয়েছে তার রুপকে।এখানের রাজা পাহাড় সংশ্লিষ্ঠ বালিঝুড়ি যেন প্রকৃতির এক বিশেষ দান।উপজাতি অধ্যূষিত বাবলাকোণা গ্রাম।আদিবাসিদের নিজস্ব সভ্যতা সংস্কৃতির ছায়া ঘেরা গ্রামটি অনিদ্য অপরুপ।তাদের জীবন যাত্রা আর মাটির পরিচ্ছন্ন নির্জন বাড়ীঘরকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে মন ভুলানো রাঙা মাটির এক গ্রাম।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেছেন এখানের প্রকৃতি খুব সুন্দর জেলা প্রশাসন পর্যটনকে সমৃদ্ধ করতে পরিকল্পরা করছে।মোটেল করেতে প্রস্তবনা দেওয়া হয়েছে।পর্যটন পুলিশ পাওয়া যাবে।

আরো খবর

আপনার মতামত দিন